বিনোদন জগৎ

প্রতিদিনের বিনোদন আয়োজন...........

বিনোদন জগতের সর্বশেষ খবর

Wednesday, January 3, 2018

এখন কেমন আছেন সেই "দীপু নাম্বার টু" এর ছোট্ট দীপু ও তারিক?

দীপু নাম্বার টু বাংলা ভাষায় লিখিত ও প্রকাশিত একটি কিশোর উপন্যাস যার লেখক বাংলাদেশের প্রখ্যাত লেখক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। এটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল বাংলাদেশের একমাত্র শিশু-কিশোর সংবাদপত্র কিশোর বাংলায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে লেখক এই উপন্যাসটি রচনা করেন এবং কিশোর বাংলা'র ১৯৮১'র ঈদ সংখ্যায় প্রকাশের জন্য সম্পাদক রফিকুল হককে ডাকযোগে প্রেরণ করেন। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে এটি প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। পরবর্তী কালে সময় প্রকাশন এই উপন্যাসটি গ্রন্থাকারে প্রকাশ করে। পরবর্তীতে এটি নিয়ে একটি চলচ্চিত্র দীপু নাম্বার টু (চলচ্চিত্র) নির্মিত হয়। "দীপু নাম্বার টু" রচনা প্রসঙ্গে লেখক জাফর ইকবাল বলেন, "আমি যখন পদার্থ বিজ্ঞানে পিএইচ.ডি. করার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছি তখন সেখানে আমি একেবারেই একা, বাংলায় কথা বলার একজন মানুষও নেই পড়াশোনার প্রচণ্ড চাপ, সিয়াটলের মেঘে ঢাকা ধূসর আকাশ, গুঁড়িগুড়ি বৃষ্টি, কনকনে শীত সব মিলিয়ে খুব মন খারাপ করা নিঃসঙ্গ একটা পরিবেশ। একাকীত্ব দূর করার জন্যে আমি তখন কল্পনায় একটা কিশোর তৈরি করে নিয়েছিলাম। তার নাম দিয়েছিলাম দীপু। যখন মন খারাপ হতো সেই কিশোরটি তখন আমাকে সঙ্গ দিতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃষ্টিভেজা ক্যাম্পাসের পিঠে ব্যাকপ্যাক নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সেই কাল্পনিক চরিত্রকে তা আপনজনদের প্রায় সত্যিকার মানুষদের মতো দেখতে পেতাম। এক সময় সেই কিশোর আর তার প্রিয় মানুষদের সুখ-দুঃখ আর অ্যাডভেঞ্চারের কাহিনীটা লিখতে বসেছি, গভীর ভালোবাসা নিয়ে লিখে শেষ করেছি। লেখা শেষ হলে নাম দিয়েছি দীপু নাম্বার টু!"

এখন কেমন আছেন সেই ছোট বেলার দীপু ও তারিক?

ছোটবেলার সেই জগৎ পেরিয়ে এখন অনেক বড় হয়ে গেছে দীপু ও তারিক। তবে মিডিয়া পাড়ার এই জগতটাকে দু’জনের কেউই ভুলে যাননি। ২০১৫ সালে শরাফ আহম্মেদ জীবনের পরিচালনায় অকাপিয়া মোবাইল ফোনের বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করেন অরুণ সাহা। এর আগে ১৯৯৯ সালে সেন্ট জোসেফ স্কুল থেকে এসএসসি ও নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন তিনি। পরে ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ব্যাচেলর অব ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনে এইচএলএস এশিয়া লিমিটেড (HLS Asia Ltd.) এবং ওয়েদারফোর্ড (Weatherford) নামে দুটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে “ওয়্যারলাইন লগিং ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ার” পদে কর্মরত ছিলেন বাল্যকালের এই অভিনেতা।
বর্তমান ছবি

এদিকে তারিক তথা শুভাশীষের ইচ্ছা ছিল ক্যামেরার পেছনে কাজ করার। তাই দীপু নাম্বার টু’তে কাজ করার পর ক্যামেরার সামনে আর আসা হয়নি তার। এমনিতে পড়াশুনার কাজে বেশ ব্যস্ত থাকতে হলেও বর্তমানে ক্যামেরার পেছনে বেশ সক্রিয় তিনি। এরই মধ্যে সরকারি-বেসরকারি প্রায় ৫০টি তথ্যচিত্র তৈরি করেছেন। এছাড়া ‘যে শহর চোরাবালি’ নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবিও নির্মাণ করেছেন এই ক্যামেরার কারিগর। সামনে দিনগুলোতে আরও ভাল কিছু উপহার দেবার প্রত্যয় নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছেন শুভাশীষ। 


সময় খুব দ্রুত চলে যায়। বাস্তবতার নির্মমতায় হারিয়ে যায় ছোটবেলার সেই কোমল মনগুলো, ক্রমেই জটিল হয়ে উঠি আমরা। তবে থেকে যায় কিছু স্মৃতি। যার মধ্যে থেকে আমরা খুঁজে নিই কিছু সুখ। আজকাল বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে খুঁজে নিই ছোটবেলার বন্ধুদের! পৃথিবীর সবকিছু হয়ত ভুলে যাওয়া চলে তাদের কখনো ভোলা চলে না, চাইলেও ভোলা যায় না। আর এসব বন্ধুদের এক টুকরো স্মৃতি, স্যারের বেতের বাড়ি, ক্লাসের শেষে হুটহাট মারামারি, মা-বাবার আদর, বহু চেনা-অচেনা বন্ধন, দুঃসাহসিক অভিযানসহ এ রকম আরও অনেক শব্দকে-অনুভূতিকে যদি এক কথায় প্রকাশ করতে বলা হয় তাহলে সম্ভবত সবচেয়ে উপযুক্ত হবে ‘দীপু নাম্বার টু’।

No comments:

Post a Comment

loading...